পটকা মাছের কথা মনে আছে? পটকা মাছ অঞ্চল ভেদে
পোটকা,যোগা,ফটকা,কাঁটা টেপা বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের নদী,নালা,খাল বিলে এক সময়ে
অধিক পরিমানে দেখা গেলেও এখন অনেকে পটকা মাছ চিনেও না! কারন পটকা মাছ এখন বিলুপ্ত
প্রায়।
বিষাক্ত পটকা মাছ খেয়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই ধরনের
খবর পত্রিকাতে প্রায় আসলেও এখন এই মাছের খবরও কেউ রাখেনা। পটকা মাছ অধিক পরিমানে
খেয়ে ফেলার কারনে যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে তা কিন্তু নয়। এই মাছ বিলুপ্তির প্রধান কারন
পানির প্রাকৃতিক পরিবেশের বিপর্যয়।
আমার এই আলোচনা পটকা মাছ দিয়ে শুরু হলেও আমার
আলোচনার মূল উদ্দেশ্য কিন্তু পটকা মাছ নিয়ে আলোচনা করা না। আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে
মাছ ও মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সকল কে আহবান জানানো।
এক সময়ে বাংলাদেশের মানুষের জন্য পুকুর ভরা মাছ ও
গোয়াল ভরা গরুর কথা প্রচলন ছিল।
আর কথায়ছিল “মাছে ভাতে বাঙ্গালি”
কিন্তু আজ এই সকল কথার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই। আধুনিকতা এবং প্রযুক্তির
উৎকর্ষতা আমাদেরকে তামাম পৃথিবীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেও প্রাকৃতিক সম্পদকে করছে
ধ্বংস ও বিলুপ্ত। সবচেয়ে খারাপ যে কাজটি করা হচ্ছে তা হল প্রকৃতি সংরক্ষনের নামে
প্রকৃতিকে করা হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ।
বাংলাদেশে এই বিষয়টি আর ভয়াবহ অবস্থা ধারন
করেছে। বাংলাদেশের সমৃদ্ধ নদী-নালা,পুকুর,ডোবা,হাওড়-বাওড় ইত্যাদি এখন শুধু জলামগ্ন
ভাগার ছাড়া আর কিছুই নয়। এসব জলাশয়ে স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশের কোন বালাই নেই।
রাজনৈতিক সরকারেরা দেশপ্রেমের নামে
গদিপ্রেম ও ক্ষমতার নামে সম্পদ দখলে লিপ্ত থাকায় এই দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ আজ
অবহেলিত এবং বিলুপ্ত। রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ইতিহাস জানতে পারবেন কিন্তু প্রকৃতি
না! ইতিহাস জ্ঞান বাড়াবে কিন্তু প্রকৃতি দিবে ভালোভাবে বাঁচার অধিকার।
তাই আসুন এখনি প্রকৃতি এবং এই প্রকৃতির
অংশ জলজ সম্পদ তথা মাছ ও মৎস্য সম্পদ সংরক্ষনে সকলে এগিয়ে আসি। বাঁচাই
প্রকৃতি,বাঁচাই মানুষ,বাঁচাই দেশ।